আমরা সবাই জানি যে, সরস্বতী হলেন জ্ঞান, সংগীত, শিল্পকলা, এবং বুদ্ধি ও বিদ্যার দেবী। বাংলার মাঘ মাসের শ্রীপঞ্চমী তিথিতে এই সরস্বতীর পূজা হয়। বাঙালির প্রতিটা ঘরে ঘরে এমনকি, পাড়ায় পাড়ায় ও এই পুজো হয়ে থাকে। বাংলার মাঘ মাসের শুক্লা পক্ষের পঞ্চমী তিথিতে এই জ্ঞান, বিদ্যার দেবী সরস্বতীর পূজা করা হয়।
অন্যদিকে এই উৎসব কে বাসন্ত পঞ্চমী বা দেবী সরস্বতীর পূজা ও বলা হয়। পড়াশোনা, সংগীত এবং শিল্পকলায় সফলতার জন্যই মায়ের কাছ থেকে আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীরা এই দেবীর আরাধনা করে থাকে। এই পুজো অর্থাৎ সরস্বতী পুজার দিন, ছাত্রাছাত্রী এবং শিল্পীমহলে ও বিশেষ উৎসাহ দেখা যায়।
প্রত্যেক শিক্ষার্থী এবং যেসব মানুষ শিল্পকলার সঙ্গে যুক্ত তাঁদের একটা বড় অংশ সরস্বতী পুজার দিন এই দেবীর আরাধানায় মেতে ওঠেন। এই সরস্বতী পুজোর দিনে কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ নয়, বিভিন্ন পুরাণে তার সুস্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা রয়েছে। বিভিন্ন হিন্দু পুরাণে বলা হয়েছে যে, সরস্বতী পুজার দিন যদি ঐই বিশেষ ৮টি কাজ করা যায় তাহলে দেবী তাঁর ভক্তদের উপর খুশি হন।
তাহলে আসুন এবার জেনে নেয়া যাক, সেই বিশেষ ৭টি কাজ কি কি?
১) এই দেবীর পূজার দিন ভুলেও হাত বা পায়ের নখ কাটবেন না।
এমনকি পুজোর দিনে চুল ও কাটবেন না, তার কারণ হল, বিষয়টি অশুভ।
পুরাণে এমনটাও বলা হয়েছে যে, এই দেবীর পুজোর দিন কোনও রকম সেলাই এর কাজ না করাই ভালো।
২) প্রতিমার সামনে যে প্রদীপ জ্বালানো থাকে, খেয়াল রাখবেন তা যেন কখনোই পুরো জ্বলে জ্বলে পুড়ে শেষ না হয়ে যায়, তার কারণ হল, এই প্রদীপ আপনার মঙ্গল কামনার জন্য জ্বালানো হয়ে থাকে, তাই সেই প্রদীপ যদি পুড়ে গিয়ে শেষ হয়ে যায় তাহলে কিন্তু এটা আপনার জন্য অশুভ হতে পারে। তাই মনে করে প্রদীপের তেল শেষ হওয়ার আগেই অথবা নিভে যাওয়ার আগেই জ্বলতে থাকা প্রদীপ নিভিয়ে দিন। আর যদি সম্ভব হয় তাহলে প্রদীপে সারাক্ষণ তেল দিয়ে তা জ্বালিয়েও রাখতে পারেন।
৩) মনে রাখবেন, যে ঘরে আপনি এই দেবীর আরাধনা করবেন, সেই ঘর যেন সবসময় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকে। খেয়াল রাখবেন যে, দেয়ালে যেন মাকরসার ঝুল না থাকে।
৪) পুজোর দিন সকাল সকাল স্নান সেরে নতুন পরিষ্কার জামা-কাপড় পড়ুন। এমনকি পুজোর সময় মাথায় কোন খারাপ চিন্তাভাবনা আনবেন না, ভুলেও কোনরকম লোভনীয় আলোচনা বা কোন পরনিন্দা, পরচর্চাতে মেতে উঠবেন না।
৫) যেখানে আপনি প্রতিমা রাখবেন কখনো ভুলেও তার পাশে জুতো পড়ে ঘুরবেন না। সবসময় খালি পায়ে চলাফেরা করুন।
৬) পূজার সময় দেবীর সামনে আপনার পড়ার বইগুলো দিন, আর যদি তা ভুলে যান তাহলে কিন্তু আপনি এই বিদ্যার দেবীর আশীর্বাদ থেকে বঞ্চিত হবেন।
৭) আপনি যদি এই প্রতিটি নিয়ম মেনে সরস্বতী মায়ের পুজো করেন, তাহলে আপনার বিদ্যা এবং কর্ম ক্ষেত্রে অনেকটাই সফলতা আসবে।